চার বছরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের মেয়াদ কমিয়ে তিন বছর করা হলে এর প্রতি মেধাবী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে মনে করেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-শিক্ষক পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদ। সংগঠনটির দাবি, শুধু ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাব্যবস্থা নয়, সামগ্রিক শিক্ষার মান নিয়েই ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। সেই ব্যর্থতার দায় ঢাকতে অত্যন্ত সুকৌশলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার মেয়াদ হ্রাসের ইস্যু জাতির সামনে এনেছেন। ফলে উচ্চশিক্ষা বাধাগ্রস্ত হওয়াসহ কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি বাধাগ্রস্ত হবে। এছাড়াও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের যোগ্যতা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ কথা বলেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
গত ১৩ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ৪ বছরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের মেয়াদ ৩ বছর করার চিন্তা করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার ও এ শিক্ষাব্যবস্থায় বিরাজমান সংকট নিরসনসহ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র শিক্ষক পেশাজীবীদের ৪ দফা মেনে নেওয়ার দাবিতে ১৭ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সদস্য সচিব মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সেই মুহূর্তে শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় ও আন্তজার্তিকভাবে সমাদৃত একটি মিমাংসিত কোর্স সম্পর্কে বিতর্কিত বক্তব্য ডিপ্লোমা প্রকৌশল শিক্ষা ব্যবস্থাকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, বৈশ্বিক কর্মবাজারের ধরন বিবেচনায় যখন ভারত ও পাকিস্তানে এ কোর্সের মেয়াদ ৪ বছরে উন্নীত করা হচ্ছে, বিশ্বের অনেক দেশে কোর্সের মেয়াদ ৪ বছর বা তারও বেশি, তখন কী কারণে অভিভাবকদের অর্থ সাশ্রয়ের খোঁড়া যুক্তি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশে এই কোর্সের মেয়াদ ৪ থেকে ৩ বছরে নিয়ে আসার অভিপ্রায় ব্যক্ত করা অযৌক্তিক ও হাস্যকর।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ, পলিটেকনিক শিক্ষাব্যবস্থার তীব্র শিক্ষক স্বল্পতা নিরসন, ল্যাব ওয়ার্কসপ, ক্লাসরুম সংকট নিরসনসহ জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর অভীষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। মূল সমস্যা পাশ কাটিয়ে কারো প্ররোচণায় এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে বলেও সংবাদ সম্মেলন থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি)’র সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান, কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মো. ফজলুর রহমান খানসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।